প্রথমবার্তা,বিনোদন ডেস্কঃ রুপালিপর্দার বড় তারকা মৌসুমী। তাই তার নামের
সাথে বাড়তি কোনো বিশেষণের প্রয়োজন নেই। তার সময়কার অনেক নায়িকা সিনেমা থেকে
ছিটকে পড়লেও মৌসুমী এখনো চলচ্চিত্র বা টিভি মিডিয়ায় অভিনয় করছেন দাপটের
সাথেই। সম্প্রতি তিনি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের পরিচালনায় ‘রাত্রীর যাত্রী’
শিরোনামে নতুন একটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। গুণী এই অভিনেত্রীর
বর্তমান ও ভবিষ্যত্ ভাবনা নিয়ে লিখেছেন খালেদ আহমেদ মৌসুমী যে স্বপ্ন নিয়ে
দেশীয় চলচ্চিত্রে পা রেখেছিলেন, সেই স্বপ্ন অনেক আগেই তিনি পূরণ করেছেন।
সময়ের বিবর্তনে তিনি এখন পরিণত অভিনেত্রী। অভিনয়ের মতো পরিচালক হিসেবেও
তিনি সফলতা অর্জন করেছেন। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। আজ থেকে বছর
কুড়ি আগে মৌসুমী নিজেও কি ভেবেছিলেন দর্শক আকর্ষণের কি অদ্ভুত ক্ষমতা আছে
তার। দেখেছিলেন কি বড় কোনো স্বপ্ন! তবে চলচ্চিত্র নিয়ে মৌসুমী নিজে যতটা না
স্বপ্ন দেখেছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি স্বপ্ন দেখেছিলেন বড়পর্দার দর্শক আর
নির্মাতাদের। আর এ কারণেই দুইশ’রও বেশি চলচ্চিত্রে অভিনয় করলেও তার অভিনয়
দেখতে হলমুখী মানুষের ভিড় কখনো কমেনি। নানা সময়ে নানা মাপের অভিনেতার
বিপরীতে কাজ করে মৌসুমীই তৈরি করেছেন একাধিক পর্দাসফল জুটি। যদিও মৌসুমী
বারবারই বলে এসেছেন সময়ের বাস্তবতা আর দর্শকের চাহিদার বাইরে জুটি প্রথার
ভিন্ন কোনো আবেদন নেই। আর তাই বড়পর্দার বিশাল ক্যানভাসে শিল্পিত আঁচড় কাটার
সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে মৌসুমী বেছে নিয়েছেন অভিনয়কেই। অভিনয়কে
ভালোবাসেন বলেই বহু চলচ্চিত্রের কাজ হাতে থাকা সত্ত্বেও মৌসুমী আলাদা করে
সময় বের করেছিলেন ছোটপর্দার জন্য। ভিন্ন আঙ্গিকে কাজ করে নিজের অভিনয়
প্রতিভাটিকে উত্তরোত্তর শানিয়ে নেওয়ার তাগিদে এখানেও বহু সার্থক চরিত্র
সৃষ্টি করেছেন মৌসুমী। নিজের সফলতা সম্পর্কে মৌসুমী বলেন, ‘আমার আজকের
সাফল্যের পেছনে আসলে কাজ করেছে অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা। কেননা আমি যখন যে
চরিত্রে অভিনয় করি, তা সত্যিকার অর্থেই ভালোবেসে ও বেশ যত্ন নিয়ে করেছি।
আজকে আমার যে সাফল্য, তা পেতে আমাকে সময়ানুবর্তী হতে হয়েছে।’ অভিনয়ে ভিন্ন
ভিন্ন চরিত্র নিজের ভেতর লালন করেন তিনি। মৌসুমী যে রকম তার বাইরে চরিত্রের
প্রয়োজনে নানারকম বৈশিষ্ট্যের মানুষ হয়ে উঠতে হয় তাকে। ফলে এ বিষয়টিও
দারুণ এনজয় করেন তিনি। তার সময়কার অনেক নায়িকা সিনেমা থেকে ছিটকে পড়লেও
মৌসুমী এখনো চলচ্চিত্র বা টিভি মিডিয়ায় অভিনয় করছেন দাপটের সাথেই। বলা যায়,
যখন তার নিভে যাওয়ার কথা ঠিক সেই সময়ে নতুন করে জ্বলে উঠছেন যেন মৌসুমী।
এখন তার হাতে ১০টি ছবি রয়েছে। এ বছর তার কয়েকটি ছবি মুক্তি পাওয়ার কথা।
মুক্তির প্রতীক্ষায় রয়েছে নঈম ইমতিয়াম নেয়ামুলের ‘এক কাপ চা’, উত্তম আকাশের
‘মনের মতো ভাবী’, এফআই মানিকের ‘সৌভাগ্য’ প্রভৃতি। বর্তমানে তিনি শুটিং
করছেন সোহানুর রহমান সোহানের ‘ভালোলাগার চেয়ে একটু বেশি’, মুশফিকুর রহমান
গুলজারের ‘মন জানে না মনের ঠিকানা’ এবং বেলাল আহমেদের ‘ভালোবাসবোই তো’
সিনেমায়। অভিনয়ের পাশাপাশি মৌসুমী পরিচালনাতেও নাম লিখিয়েছেন। বেশ কয়েক বছর
আগে প্রথমবার তিনি ‘কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি’ শিরোনামের ছবিটি নির্মাণ করেন।
এরপর যুগ্মভাবে তিনি ‘মেহেরনিগার’ ছবিটি পরিচালনা করেন। আগামীতে তার নিয়মিত
পরিচালনা করার ইচ্ছে রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ‘চলো বহুদূর’ শিরোনামে
একটি টেলিফিল্ম নির্মাণ করেন। মূলত একজন প্রকৃত অভিনয়শিল্পী হওয়ার বাসনা
থেকেই অভিনয়ে জড়িয়েছেন মৌসুমী। সাঁঝের আলোতে যেমন একটা মায়া থাকে, অভিনয়ের
প্রতিও তেমনি মায়া কাজ করে তার মনে। তাই বরাবরই গল্পকে প্রাধান্য দিয়ে
আসছেন। মনের মতো গল্প পেলে তিনি নির্দ্বিধায় চলচ্চিত্র বা নাটকে অভিনয়
করেন। সম্প্রতি তিনি হাবিবুল ইসলাম হাবিবের পরিচালনায় ‘রাত্রীর যাত্রী’
নামে নতুন একটি চলচ্চিত্রে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। ভিন্নধর্মী গল্পের নতুন এই
চলচ্চিত্র প্রসঙ্গে মৌসুমী বলেন, ‘একটি মেয়ের জার্নির গল্প নিয়ে এই ছবি।
অন্ধকার বা অনিশ্চিতের পথে যাত্রা। মেয়েটি স্বপ্নের সন্ধানে সারারাত জার্নি
করে। দোদুল্যমানতায় ভর করে তার মন। যা চায় তা পাবে কি পাবে না? ভোর হবে কি
হবে না? তার ফেলে আসা জীবন, বর্তমান ও ভবিষ্যতের ভাবনা—সবকিছুই উঠে আসে এই
গল্পে। সব মিলিয়ে গল্প আমার কাছে অসাধারণ মনে হয়েছে। আশা করছি ছবির
পরিচালক হাবিব ভাইও দারুণ নির্মাণশৈলী দিয়ে সিনেমাটি বানাবেন।’
No comments:
Post a Comment